সাল ২০১৮। অগস্ট মাস। আরব সাগরের উপর দিয়ে মৌসুমী বায়ু প্রবল বেগে ধাবিত হচ্ছে হিমালয়ের পাদদেশে। পথে যা কিছু পড়েছে তাই বিধ্বংসের মুখে। ধ্বংস এবং সৃষ্টির এই চক্রাকালীন আবর্তনের ফাঁকে সে বছর কেরালার অসংখ্য নদী বাঁধ ভেসে যায় দুকূল ভাসানো জলের তোড়ে।

আমি তখন ঘুরে বেড়াচ্ছি আফ্রিকার বনে জঙ্গলে। কেনিয়া থেকে জাম্বিয়া হয়ে আমার ট্রিপ শেষ হচ্ছে ইজিপ্টের পিরামিডের পদতলে। কিছু কিছু খবর কানে ভেসে এসেছিল কিন্তু দেশ থেকে অত দূরে থাকার কারণে আমার সঠিক ধারণা ছিল না কেরালা কি প্রচন্ড ধ্বংসলীলার তোড়ে ভেসে যাচ্ছে। এই অবস্থায় আমাদের দেখা হয় একজন ওমানীয় ব্যবসায়ীর সাথে। ব্যবসা সূত্রে উনি প্রায়ই কেরালা ভ্রমণ করেন। উনার মুখে আমি প্রথম জানতে পারি কোচি, মুন্নার এবং পাহাড় সংলগ্ন বহু এলাকা বৃষ্টির তোড়ে জলে ভেসে গেছে। প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা অসংখ্য মানুষ এবং পশু পাখির। 

“যা হয়েছে তা অত্যন্ত খারাপ। আমি আশা করি কেরালার মানুষ এই বিপর্যয় কাটিয়ে বেরিয়ে আসতে পারবেন। উনাদের জন্য আমি প্রার্থনা করব”, ভদ্রলোক অত্যন্ত দুঃখের সাথে মন্তব্য করেন। সত্যি বলতে আমি কিছুটা অবাক হয়েছিলাম। মধ্যপ্রাচ্যের সাথে ভারতের মালাবার উপকূলের বাণিজ্য সম্পর্ক ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। কিন্তু সমসাময়িককালেও এই মানবিক সম্পর্ক গুলি এতটা দৃঢ়, এ আমি ভাবি নি।

শুধু মন্তব্য নয় উনি আমাদের ফোন খুলে দেখিয়েছিলেন ঠিক কোন কোন অনলাইন পোর্টালে গিয়ে কেরালার জন্য কিছু আর্থিক সাহায্য করা যায়। পথে-ঘাটে মানুষের অযাচিত, করুণা এবং ভালোবাসায় আমি বহুবার অভিভূত হয়েছি। কিন্তু মিশরের রাজধানী কায়রোর রাস্তায় এই মানুষের সাথে কেরালা বিষয়ক আলাপ আমি জীবনেও ভুলব না।

তবে হবে নাই বা কেন। ভারতের প্রত্যন্ত কোনায় কোনায় অবস্থিত ছোট্টো গ্রামগুলিরগ্রামগুলির আতিথেয়তা প্রবাদপ্রতিম। কেরালা তার ব্যতিক্রম নয়। মানুষের মুখেরকথা এখানে কমিটমেন্ট। হাসি অকৃত্রিম। অনুষ্ঠান সর্বব্যাপী, সর্ব মঙ্গলময়। রবীন্দ্রনাথ লিখে গিয়েছেন, “এই ভারতের মহামানবের সাগরতীরে”। দৈনন্দিন জীবনে এই পংক্তিগুলি সত্যি হয়ে উঠেছে কেরালার কোনায় কোনায়।

ব্যাঙ্গালোরে থাকাকালীন আমি ক্রাইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করি। খ্রিস্টান মিশনারীদের দ্বারা পরিচালিত এই ইউনিভার্সিটি। কেরালার বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক প্রভাব এখানে প্রস্ফুটিত। যদিও সারা ভারত থেকে মানুষ এখানে পড়তে আসেন, কেরালা এবং তার মানুষজনের সর্বময় উপস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনস্বীকার্য। 

কতবার আমার বন্ধুরা বলেছে আমাকে, “এ বছরে গরমের ছুটিতে আলাপুজা চল, আমার দাদার হাউসবোটে বসে ভেম্বানাদ জলাশয়ে সূর্যাস্ত দেখবি।” 

স্থানীয় খাওয়া-দাওয়ার ওপর আমার উৎসাহ চিরকালীন। কলেজের বন্ধুরা অকুণ্ঠচিত্তে আমাকে তাদের আতিথেয়তা দিয়েছে, ডেকে নিয়েছে কেরালার মহোৎসব ওনাম অনুষ্ঠানে। পরিষ্কার কলাপাতা জলে মুছে তাতে পরিবেশন করা হয় সাধ্য, এক বিশাল নিরামিষাশী খাদ্য সম্ভার। আমার সুন্দরী বন্ধুরা সোনালী পার সাদা কসাভু শাড়িতে সেজে উঠেছে। তাদের পাশে আমার বাঙালি লাল পাড় সাদা গরদের শাড়ি এক মুহূর্তের জন্য বেমানান মনে হয়নি। ওনাম উৎসবের আনন্দ মানুষের সাথে, জাতি ধর্ম বর্ণ সবই এখানে অগণ্য। 

২০১৫ সালের ক্রিসমাসের ছুটিতে ২ থেকে ৩ সপ্তাহের জন্য আমরা কেরালা ঘুরতে গেছিলাম। একটি গাড়ি ভাড়া করে আমরা ছুটে বেড়িয়েছি আরব সাগরের তীরে পুরাতন নগরী কোচি থেকে পশ্চিমঘাট পর্বতের রানী মুন্নার। মুন্নারের দুটি পাতা একটি কুঁড়ির চা বাগানের আঘ্রাণ হারিয়ে গিয়েছে থেকারির রাস্তায় অবস্থিত ঘন সবুজ মসলা জঙ্গলে। ঢেউ খেলানো পাহাড়, একটি দুটি বন্য টা৺ঢ় উঁকি মারে ঘন ঘাস বনের ফাঁকে। এই পাহাড়ের জঙ্গলেই ১২ বছরে একবার প্রস্ফুটিত হয় কিংবদন্তি নীলকুরিঞ্জি ফুল।  মাঝে মাঝে মানুষের তৈরি করা গভীর নদী বাঁধ। মৌসুমী বায়ুর বদান্যতায় কেরালা নদীমাতৃক সভ্যতা ফসল ফলায়, ধামা ভরা ধান ঘরে তোলে। পাহাড়ি নদীর স্রোতকে বাঁধ দিয়ে জল ধরে রাখা হয় অসময়ের জন্য। 

মানুষ এখানে প্রকৃতির প্রিয় সন্তান। এ বিষয়টি সবথেকে বেশি চোখে পড়ে যখন আপনি পৌঁছে যাবেন আলাপুজা, ব্রিটিশ নাম আলেপ্পি নামেও এ জায়গাটি বিখ্যাত। ছোট ছোট খা৺ড়ি বেয়ে আরব সাগর এখানে প্রবেশ করেছে জনজীবনের মাঝে। শিরা-উপশিরার মতো সমুদ্রের লবণাক্ত জল আর ভেম্বনাদ জলাশয় সম্পৃক্ত হয়েছে একে অন্যের সাথে। ছোট ছোট কাঠের নৌকা এখানে মানুষের জীবনযাপনের অপরিহার্য অঙ্গ। স্কুলে যাওয়ার জন্য একটি নৌকা দরকার, মাঠের ধান ঘরে তুলতে ও নৌকা দরকার। শান্ত বাড়ির পাশে মানুষ এখানে বিকেলবেলা ছিপ নিয়ে বসে থাকে, ঘরের পাশেই যদি মাছ পাওয়া যায় বাজার যাওয়ার দরকারটা কোথায়?

Human by nature Campaign: Kerala bengali Travel Blog

বলাবাহুল্য, ব্যাঙ্গালোর নিবাসী হওয়ার সুবাদে কেরালা এরপরেও আমি বহুবার গিয়েছি। কখনো পার্বত্য ওয়ানন্দের ছোট শহর সুলতান বাথেরি, কখনো নীলগিরি জঙ্গলের রহস্যময় আহ্বান, কখনো বা ভ্যাগামনে ক্যাম্পিং। বিভিন্ন সময় আমি কেরালায় বিভিন্ন রূপ দেখেছি। তারমধ্যে বর্ষাকালীন কেরালা আমার সবথেকে বেশি পছন্দের। মাটির সাথে সাথে কেরালার মানুষগুলিও এই সময়ে সজীব হয়ে ওঠেন। কাজেই কেরালার সরকারি ভ্রমণ কমিটি যখন আমাকে হিউম্যান বাই নেচার ক্যাম্পেইন প্রমোশনের জন্য ওখানকার মানুষগুলোর কথা লিখতে বললেন আমি সানন্দে রাজী হলাম।

vagamon river

আরও বাংলা ব্লগ পড়ুন: লুয়াং প্রবাং ভ্রমণ গাইড

সুদূর অতীত ইসরাইলের সাথে কেরালায় বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। কোচি শহরে প্রাচীন ইহুদি পাড়ায় এখনো কয়েকটি পরিবার বেঁচে রয়েছে, সেই সাথে নিরাপদ রয়েছে ভারতীয় ইহুদি সম্প্রদায়ের অসাধারণ ঐতিহ্য। কথিত আছে যিশুখ্রিস্টের ১২ জন শিষ্যের মধ্যে একজন, সেন্ট থমাস, খ্রিস্টধর্ম প্রচার করেছিলেন কেরালায়। সুদূর অতীতের কাহিনী। শুধু তাই নয়, কেরালার পুরানো খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী মানুষজনের প্রথা এবং রীতি-নীতি পরবর্তীকালে ব্রিটিশ প্রভাবিত ভারতীয় অ্যাংলিকান খ্রিস্টীয় সমাজের থেকে অনেক আলাদা। পরবর্তীকালে ইথিওপিয়া ভ্রমণকালীন আমি দেখেছি ওখানকার মানুষজন কেরালার ওল্ড ক্রিশ্চিয়ানিটি সম্পর্কে অবগত। 

আরব এবং মধ্যপ্রাচ্যের সাথে কেরালার বাণিজ্য সম্পর্ক বহু প্রাচীন। এই বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রথম ইসলাম ধর্ম আসে ভারতে, আর ভারত থেকে মশলাপাতি বোঝাই জাহাজ পৌঁছয় ইউরোপ এবং পাশ্চাত্য দেশগুলিতে। এর পরবর্তীকালীন ভারতের কলোনিয়াল ইতিহাস আমরা সবাই জানি। যার সূত্রপাত ঘটেছিল পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কোডাগামার ভারতের পশ্চিম উপকূলে কালিকটে পা দেয়ার সাথে সাথে। 

কাজেই কেরালা ঘোরার সময় হয়তো ভোরবেলা আপনার ঘুম ভেঙে যাবে আজানের শব্দে, রাস্তায় ঘোরাঘুরি করতে করতে হঠাৎ করে চোখে পড়বে লাল পতাকা এবং কাস্তে হাতুড়ির রাজনৈতিক অস্তিত্ব, সেই সাথে পূজিত হবেন প্রাচীন হিন্দু ধর্মের বহু দেব দেবী। কথিত আছে পরশুরাম মাতৃ হত্যার পাপ থেকে মুক্তি পাবার জন্য নিজের কুঠার ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন ভারতের পশ্চিম দিকে সাগরের ধারে। সেই জমি পরবর্তীকালে উঠে এসেছে, তৈরি হয়েছে পশ্চিম ঘাট পর্বতমালা। পশ্চিমঘাট পর্বত এবং মালাবার উপকূল মধ্যবর্তী জনপদ, যাকে আজ আমরা কেরালা নামে চিনি। 

কেরালার মানুষের সাথে আমার প্রথম বন্ধুত্ব হয় ওনাদের অসাধারণ খাদ্য শৈলীর মাধ্যমে। আমাদের যেমন ইলিশ মাছ এনাদের তেমনি কিং ফিশ অথবা সির মাছ। পমপ্লেট এবং কারীমীন নামের দুই ধরনের মাছ ও ব্যবহার হয়। নারকেলের দুধ এবং নারকেলের তেলে অল্প হলুদ এবং অনেকটা গোলমরিচ দিয়ে হালকা করে কষানো মাছের পদ, মীন মলি। এর সাথে আসে পাতলা সুস্বাদু আপ্পাম।

সেই সাথে আছে কষা করে এগ রোস্ট। কাঁচা আম আর নারকেলের দুধ দিয়ে তৈরি কালিকটের সাওগালকর রেস্তোরাঁর একটি চিংড়ি মাছের পদ আজও আমার মুখে লেগে আছে। কোচি ভ্রমনকালীন আপনি একটি কুকিং ক্লাস থেকে ক্লাসিক্যাল কেরালার খাওয়া-দাওয়া বানানোর শিক্ষা নিতেই পারেন। অদিতি নামের একজন ভদ্রমহিলা আমাকে আভিয়াল আর বিভিন্ন মাছের পদ শিখিয়েছিলেন। কুচোনো নারকেল আর কুচি কুচি করে কাটা স্কুইড দিয়ে এক ধরনের স্টার্টার খুব বিখ্যাত। 

Meen Molee recipe from kerala: Fish stewed in coconut milk.

বাঙ্গালী রসনার কাছে কেরালার খাওয়া-দাওয়া আবেদন আলাদা। অবশ্যই খেয়ে দেখবেন এখানকার বিরিয়ানি। কেরালা থালাসেরি বিরিয়ানি অনেকটা আরব দেশের মান্ডির ভারতীয় সংস্করণ। মসলার পরিমান অনেকটাই বেশি। শুনতে অবাক লাগলেও, থালাসেরি বিরিয়ানি কিন্তু মাছ বা চিংড়ি মাছ দিয়েও তৈরি করা যায়, এবং এটি খেতে দুর্দান্ত। 

মুন্নারে আমরা একটি ট্রি হাউসে ছিলাম। চারদিকে কফি এস্টেট, তার বাইরে ঘন জঙ্গল পরিবেষ্টিত পাহাড়। একজন ভদ্রলোক তার পরিবার নিয়ে পিতৃপুরুষের বাড়িতে ফিরে এসেছেন। যৌবনকালে উনি থাকতেন দুবাইতে। দুই মেয়ে এবং দুই ছেলে। ওনার স্ত্রী রাত্রেবেলা আমাদের গরম রুটি আর দেশি মুরগির ঝোল বানিয়ে পরিবেশন করতেন।

একটি পুরনো রাইফেল উনাদের বসার ঘরে ঝুলানো ছিল। আমার উৎসাহ দেখে উনি জানান যে জঙ্গলের থেকে মাঝে মাঝে শেয়ালের উৎপাত তাড়ানোর জন্য এই ব্যবস্থা। শুধু শেয়াল না, জঙ্গল থেকে বেরিয়ে একটি কচ্ছপ ওনার এস্টেটে আস্তানা গাড়ে। পরম স্নেহে ওনার পরিবার তাকে আপন করে নেন। এত দেশ এত জায়গা ঘুরে বেরিয়েছি, কিন্তু আর কখনো কোন বাড়ি দেখিনি যাদের একটি পোষা কচ্ছপ আছে।

Human by nature Campaign: Kerala bengali Travel Blog

মুন্নারের থেকেও আমার অতুলনীয় সৌন্দর্যময় মনে হয়েছিল থেকারীর পেরিয়ার জঙ্গলকে। গভীর অন্ধকারে আমরা স্থানীয় গাইডের সাথে হেঁটে গিয়েছিলাম জঙ্গলের গভীরে। এলিফ্যান্ট করিডোর পাশেই। বন্যপ্রাণীর উগ্র গন্ধ বিস্তৃত চরাচরকে রাতের অন্ধকারে ভরিয়ে রেখেছে। কয়েকটি বিপুল আকার সম্বর হরিণ, আর বিষধর কোবরা সাপ দেখে তিন ঘন্টার মধ্যে আমরা ফেরত চলে আসি নগরের রক্ষাকবচ পড়ে নিতে। পেরিয়ার জঙ্গলে কে বেষ্টিত করে আছে কিছু মনুষ্য নির্মিত নদী বাঁধ। বাঁশের তৈরি ভেলা বা স্টিমারকে সঙ্গী করে আপনি ভেসে পড়তে পারেন ওই জলে। বন্য কুকুর, বিভিন্ন পরিযায়ী পাখি, বন্য বরাহ এবং কপাল ভালো থাকলে দু একটি বাঘ বা অতিকায় হাতি দেখা দিতে পারে। 

যদিও আমরা কোন ভয়াল পশুর সম্মুখীন হইনি, আমাদের গাইড কিন্তু একটি রাইফেল হাতে নিয়ে হাঁটছিলেন। শুধুমাত্র বাতাসে ফাঁকা বন্দুকের আওয়াজ করার অনুমতি ছিল ওনার কাছে, যদি কোনো আক্রমণ ঘটে। উনার মত প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ আমি আর দুটি দেখিনি। 

এত সুন্দর ট্রেনিং দেওয়া হয় এনাদের, জঙ্গলের বর্ণ গন্ধ শব্দ সমস্ত ভাষায় এদের মজ্জাগত। উনি আমাদের শুধু জঙ্গল দেখাননি, উনি আমাদের জঙ্গলের ফুল ফল, প্রকৃতির সৌন্দর্য, তার কার্যকারণ সমস্ত ব্যাখ্যা করেছেন। সেই সাথে জানিয়েছিলেন চন্দন কাঠ পাচারের করুণ কাহিনী। একটি চন্দন কাঠ গাছ, কম করেও কুড়ি ফুট লম্বা, মাঝখান দিয়ে ভেঙে পড়েছিল একটি টিনের জঙ্গল প্রহরাদারের বাড়ির ওপরে। গাছটির গায়ে উনি হাত বুলিয়ে আমাদের ব্যাখ্যা করছিলেন চন্দনডাকাতের উৎপাত কাহিনী। ওই মৃতপ্রায় কাঠের গায়ে হাত বোলানো এবং তার পুনরুজ্জীবনের না বলা করুণ আবেদন বড়ই স্মৃতি মধুর। 

Human by nature Kerala bengali Campaign

কেরালা হল আমাদের দেশের দারুচিনির দ্বীপ। এর জঙ্গলের গভীরে না বলা ঠিকানায় ফুটে থাকে লবঙ্গ লতিকা। কেরালার মানুষজনের এ নিয়ে গর্বের সীমা নেই। একসময় এই পাহাড়ী এলাকায় হাতি ছাড়া ঢোকার কোন উপায় ছিলনা। সেই কুনকি হাতি গুলির পরবর্তীকালে কখনো ঠিকানা হয়েছে পর্যটন ব্যবসায়, কেউ কেউ বা স্থান পেয়েছে মন্দিরে। 

প্রকৃতি কেরালাকে সৌন্দর্য এবং ঐশ্বর্য দান করেছে অকুণ্ঠ হাতে। এখানকার মানুষ তাকে গ্রহণ করেছে শ্রদ্ধার সাথে। কিছুদিন কেরালায় থাকলেই আপনি এখানকার মানুষজনের জীবনের তাল এবং লয় বুঝতে পারবেন যার পরতে পরতে জড়িয়ে আছে প্রশান্ত আরব সমুদ্র, সদা জাগ্রত পশ্চিমঘাট পাহাড়, অসংখ্য নদী এবং প্রশস্ত ধানক্ষেত। প্রকৃতি ছাড়া কেরালার মানুষের অস্তিত্ব অকল্পনীয়, আবার ঠিক তেমনি কেরালায় মানুষের জীবনের কেন্দ্রবিন্দু জুড়ে রয়েছে অপরিসীম প্রকৃতির অস্তিত্ব। কিছুদিন কেরালা ঘুরে আসুন, হয়তো আপনার জীবনের শান্ত প্রকৃতি নির্ভর নতুনভাবে আবার উদ্ঘাটিত হবে আপনার কাছে। 

এই ব্লগটি কেরালা পর্যটন দ্বারা স্পনসর পোস্ট।  যদিও সৎ অভিজ্ঞতা এবং মতামত আমার। 

One Response

Leave a Reply to M.j.Chakraborty Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *